স্বদেশ ডেস্ক: ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রথম রাউন্ড শেষ হয়েছে। এতে এগিয়ে আছেন ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন। অপরদিকে কট্টর ডানপন্থী প্রার্থী মেরিন লা পেন দ্বিতীয় স্থানে আছেন। দেশটির নির্বাচন পদ্ধতি অনুযায়ী দ্বিতীয় রাউন্ডে লড়বেন ম্যাক্রন ও লা পেন। এবার দেশটির নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ছিলেন মোট ১২ জন। নিয়মানুসারে, প্রথম রাউন্ডে সর্বাধিক ভোট পাওয়া দুই প্রার্থীর মধ্যে পরবর্তী পর্বে তথা দ্বিতীয় রাউন্ডে চূড়ান্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।
ওয়াশিংটন পোস্ট বলছে, ৯৭ শতাংশ ভোট গণনার পর দেখা গেছে এতে সবার থেকে এগিয়ে আছেন ইমানুয়েল ম্যাক্রন। তিনি পেয়েছেন ২৮ শতাংশ ভোট। অপরদিকে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী লা পেন পেয়েছেন ২৩ শতাংশ ভোট।
বামপন্থী নেতা জ্য লাক মিলেনচন ২০ শতাংশ ভোট পেয়ে আছেন তৃতীয় স্থানে। প্রথম ধাপে ভোটদানের হার ছিল অনেক কম। প্রথম চার ঘণ্টায় মাত্র ২৫ শতাংশ ভোট পড়ে, যা গত ২০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।
আগামি ২৪ এপ্রিল দ্বিতীয় রানঅফের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। এতে লড়বেন ম্যাক্রন ও লা পেন। উদার অর্থনীতি এবং বৈশ্বিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে নির্বাচনে লড়ছেন প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রন। ইউক্রেন যুদ্ধের আগ পর্যন্ত রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রকাশ্য প্রশংসাকারী ছিলেন তিনি। বিগত দুই দশকের মধ্যে ফ্রান্সের কোনো প্রেসিডেন্ট দ্বিতীয় মেয়াদে জয় পাননি। এক মাস আগেও মনে করা হচ্ছিল সেই অবস্থা পাল্টাতে চলেছেন ম্যাক্রন। জোরাল অর্থনৈতিক উন্নতি, ভেঙে পড়া বিরোধী শিবির এবং পূর্ব ইউরোপে যুদ্ধ এড়াতে রাষ্ট্রনায়কোচিত ভূমিকার পিঠে চড়ে ফের ক্ষমতায় বসতে যাচ্ছেন বলে অনেকেই ধারণা করছিলেন। তবে নির্বাচনী প্রচারে দেরিতে প্রবেশের মূল্য দিতে হতে পারে তাকে।
ম্যাক্রন মূলত মধ্যপন্থী রাজনীতি করেন। ২০১৭ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লা পেনকে ৩০ শতাংশেরও বেশি ভোটে পেছনে ফেলেছিলেন ম্যাক্রন। কিন্তু এ বছর তিনি সামান্য ব্যবধানে এগিয়ে আছেন। ওয়াশিংটন পোস্ট বলছে, ফরাসিরা ম্যাক্রনের শাসন নিয়ে যে হতাশ এবং দ্রব্যমূল্যের দাম নিয়ে উদ্বিগ্ন তা ভোটের ফলাফলে উঠে এসেছে। ম্যাক্রন তার অনুসারীদের উদ্দেশ্যে ভাষণে বলেন, আমি এমন ফ্রান্স চাই যা শক্তিশালী ইউরোপের অংশ। এমন ফ্রান্স চাই না যা সবাইকে অস্বীকার করে। তার অনুসারীদের দেখা যায় হাতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পতাকা নিয়ে সমাবেশ করছে।
অন্যদিকে মেরিন লা পেন কয়েক মাস ধরেই ফ্রান্সের শহর ও গ্রামে প্রচার চালিয়েছেন। জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির ওপর জোর দিয়ে প্রচার চালিয়ে গেছেন তিনি। এবারের নির্বাচনী প্রচার অভিযানে প্রথমে প্রভাব ফেলেছিল কোভিড মহামারি, পরে ইউক্রেনের যুদ্ধ। ফ্রান্সে লা পেন জয় পেলে তিনি হবেন দেশটির ইতিহাসের প্রথম কট্টর ডানপন্থী প্রেসিডেন্ট। একইসঙ্গে ইউরোপের রাজনীতিতেও বড় প্রভাব ফেলবে এটি। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সবথেকে বড় সমর্থকদের একজন ম্যাক্রন। অপরদিকে লা পেন তার ইইউ বিরোধী মনোভাবের জন্য পরিচিত। যদিও লা পেন সম্প্রতি নিজের ইমেজকে কিছুটা উদারপন্থী করার চেষ্টা করেছেন।